Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

পুষ্টি নিরাপত্তা ও পরিবেশ রক্ষায় ফলদ বৃক্ষরোপণ

পুষ্টি নিরাপত্তা ও পরিবেশ রক্ষায় ফলদ বৃক্ষরোপণ
কৃষিবিদ মো. আফতাব উদ্দিন১ কৃষিবিদ সাবিনা ইয়াসমিন২

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার অন্যতম ভিত্তি ছিল কৃষি। বহু কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা অর্জনের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধু তাই সর্বপ্রথমে সবুজ বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গভীরভাবে বিশ্বাস করতেন, কৃষির উন্নতি ছাড়া এ দেশের মানুষের মুক্তি আসতে পারে না। কৃষকরাই এ দেশের প্রাণ। বঙ্গবন্ধুর এসব বাস্তবধর্মী ও কৃষক দরদি নীতির ফলে কৃষি ক্ষেত্রে অগ্রগতির যে ধারা সূচিত হয়েছিল, তারই ফলে আজ কৃষি ক্ষেত্রে শক্তিশালী ধারা সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমান সরকার যে কল্যাণধর্মী ও কৃষকবান্ধব উন্নয়ন নীতি কৌশল গ্রহণ করেছে, তা বঙ্গবন্ধুর  কৃষি ভাবনারই প্রতিফলন। সাম্প্রতিক সময়ে কৃষি খাতে উন্নয়নের কারণে বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়েছে। স্বাধীনতার ঠিক পরে ১৯৭২ সালে দেশে খাদ্যশস্য উৎপাদন হয় ১ কোটি ১০ লাখ টন; এর মধ্যে ধান উৎপাদন হয় মাত্র ৯৩ লাখ টন। তখন সাড়ে সাত কোটি মানুষের জন্য এই পরিমাণ খাদ্য পর্যাপ্ত ছিল না। স্বাধীনতার ৫০ বছরের ব্যবধানে আজ দেশের মানুষ বেড়ে আড়াইগুণ হয়েছে, আবাদি জমি কমেছে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ। অন্যদিকে খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে সাড়ে তিন গুণেরও বেশি, খাদ্যশস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ আজ স্বনির্ভর। পুষ্টি নিরাপত্তার জন্য উদ্যানতাত্ত্বিক ফসলের উন্নয়নে প্রতিনিয়ত কাজ করা হচ্ছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু নিজ হাতে নারিকেল চারা রোপণ করে দেশে ফলদ বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব মানুষের মাঝে তুলে ধরেছিলেন এবং তিনি কৃষি সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছিলেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে স্বাধীনতা উত্তর সময়ে ফল গবেষণা, সম্প্রসারণ কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত ফল উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে বিশ্বে বাংলাদেশ আম উৎপাদনে ৭ম, কাঁঠাল উৎপাদনে ২য় অবস্থানে রয়েছে। এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। প্রতিটি ইঞ্চি জায়গার সদ্ব্যবহার করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। কৃষিপণ্য বহুমুখীকরণ, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও বাণিজ্যিকীকরণ এর মাধ্যমে কৃষিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই বর্তমান সরকারের মূল লক্ষ্য।  
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ফলের গুরুত্ব ও অবদান অপরিসীম। বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ উপাদানের চাহিদাপূরণ, শারীরিক বৃদ্ধি ও  দেহের ক্ষয় রোধ, মেধার বিকাশ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, সর্বোপরি দেশের জনগণের দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান ও আয়বৃদ্ধিসহ নানাবিধ সুবিধা আমরা ফল থেকে পাই। ফলদ বৃক্ষ রোপণে যেমন খাদ্যের চাহিদা পূরণ হবে, একই সাথে সুস্বাস্থ্যের জন্য জীবন রক্ষাকারী অক্সিজেন সরবরাহ, পরিবেশ দূষণ কমানো,  প্রাকৃতিক বিপর্যয় রোধ এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে ফলদ বৃক্ষের ভূমিকা অনস্বীকার্য। এছাড়া পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে পরিবেশ বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় পক্ষ থেকে প্রতিবছর ৫ জুন বিশ^ পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান আয়োজন করা হয়। এ বছর মুজিবর্ষে দেশকে সবুজে শোভিত করে ফেলতে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে জাম, আমড়া, ডুমুর ও সোনালু বৃক্ষের চারা রোপণ করে জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ২০২১ উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ হওয়ায় এখানে প্রায় ১৩০ রকমের ফল উৎপাদিত হয় যার মধ্যে কমপক্ষে ৭০টি বৃহত্তর পরিসরে চাষ করা হয়। এক্ষেত্রে প্রচলিত এবং অপ্রচলিত ফলগুলোকে বাণিজ্যিকভাবে চাষের জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে ও ফল চাষকে লাভজনক করতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দক্ষ জনবল দেশব্যাপী কৃষি সেবা প্রদান করে যাচ্ছে।  ফলের চাষ সম্প্রসারণ করে দেশের খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা পূরণের জন্য প্রতি বছরই সরকারি উদ্যোগে ফলদ বৃক্ষরোপণ পক্ষ বাস্তবায়ন ও বিনামূল্যে ফলের চারা/কলম বিতরণ করা হয়। এছাড়াও প্রচারণা ও উদ্বুদ্ধকরণের জন্য ৩ দিনব্যাপী জাতীয় ফল মেলা ও বাংলাদেশের মোট ৪৯২টি উপজেলায় ৩ দিনব্যাপী ফল ও বৃক্ষমেলা আয়োজন করা ও চারা/কলম বিতরণ করা হয়ে থাকে। এসব কার্যক্রমের প্রভাব হিসেবে বাংলাদেশে উত্তরোত্তর ফল উৎপাদন ও ফলের বৈচিত্র্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ফল গ্রহণের হারও  আশানুরূপভাবে বাড়ছে।
ফলদ ও ঔষধি বৃক্ষরোপণ পক্ষ বাস্তবায়ন
জলবায়ু পরিবর্তন ও দ্রুত নগরায়নের মারাত্মক প্রভাব থেকে  বাংলাদেশের জনগণকে ফলদ ও ঔষধি বৃক্ষ রোপণে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) প্রতি বছর  ১৬-৩০ জুন পর্যন্ত মোট ১৫ দিন ফলদ বৃক্ষ রোপণ পক্ষ উদ্যাপন করে থাকে এবং ৩ মাসব্যাপী সারাদেশে ফলদ বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের হর্টিকালচার উইং ফলদ বৃক্ষ রোপণ পক্ষ উপলক্ষ্যে ইউনিয়ন পর্যায়ে ব্লক ভিত্তিক ফলদ ও ঔষধি বৃক্ষ রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে থাকে। সেই লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে কাজ করে থাকে মাঠ পর্যায়ের সরেজমিন উইং এর কর্মকর্তাগণ। অপর পক্ষে, হর্টিকালচার উইং এর আওতাধীন সেন্টারসমূহ উন্নত ও মানসম্পন্ন উদ্যানতাত্ত্বিক চারা/কলম উৎপাদন করে ফ্রি বা সরকারি মূল্যে বিতরণ করে থাকে। এ উপলক্ষ্যে ডিএই এর কৃষি প্রযুক্তি সেবা প্রদানের সর্বনিম্ন ইউনিট-ইউনিয়ন পর্যায়ের কৃষি ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রত্যেক উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে সরাসরি কাজ করে থাকে। তাছাড়াও সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভাতে আরও কর্মকর্তাগণ একই দায়িত্ব পালন করে থাকে। হর্টিকালচার উইং হতে প্রদত্ত টার্গেট অনুযায়ী তাদের স্ব স্ব ব্লকে অবস্থিত সরকারি ও বেসরকারি স্কুল, কলেজ, অফিস ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে অংশীজনদেরকে উদ্বুদ্ধকরণে ফলদ ও ঔষধি চারা/কলম রোপণের উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকছে। এই মহৎ কাজে এগিয়ে আসেন উপজেলা কৃষি অফিস, উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় সরকার, জাতীয় সংসদের সদস্যবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণ এবং তাদের সকলের সার্বিক সহযোগিতায় প্রতি বছর ফলদ বৃক্ষ রোপণ কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়। ফলশ্রুতিতে, সারা বাংলাদেশে প্রতি বছরই প্রায় ১ কোটি (+/-) চারা/কলম রোপণ করা হয়ে থাকে। তারই সুফল হিসেবে আমরা ফলের মৌসুমে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফল পেয়ে থাকি। ফল উৎপাদনে বাংলাদেশ বিগত বছরগুলোর উৎপাদন মাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে। শুধু উৎপাদনই নয়, ফল রপ্তানিতেও এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৭২৯২৮০ হেক্টর জমিতে ১২৩.৮৯ লক্ষ মেট্রিক টন ফল উৎপাদন হয় (সূত্র: বার্ষিক প্রতিবেদন, হর্টিকালচার উইং, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর)।
ফল উৎপাদন বৃদ্ধিতে উন্নত জাতের চারা/কলম উৎপাদন     নিশ্চিতকরণ
করোনা মহামারিকালে চারা/কলম উৎপাদন করে স্থানীয় চাহিদা মিটাতে কাজ করে যাচ্ছে হর্টিকালচার উইং এর বিভিন্ন ক্যাটাগরীর মোট ৭৬টি হর্টিকালচার সেন্টারের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। বিভিন্ন ধরনের উন্নত ও এক্সোটিক প্রজাতির ফলের চারা/কলম উৎপাদন বৃদ্ধি করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরে (২০২০-২১) বিভিন্ন ফলের চারা/কলম উৎপাদন ও বিপণন করে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকার রাজস্ব সরকারি তহবিলে জমা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি এর সকল লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সেন্টারসমূহকে হর্টিকালচার উইং বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করছে ও কাজের অগ্রগতি তদারকি করছে। ফলে সরকারি সেন্টারসমূহ হতে সরকার নির্ধারিত মূল্যে অর্থাৎ স্বল্পমূল্যে চারা-কলম ক্রয় করে রোপণ করে এই দেশে সার্বিক ফল উৎপাদন বৃদ্ধি করাসহ খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জনে হর্টিকালচার উইং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
যদি সুস্থ থাকতে চান প্রতিদিন অন্তত ভিটামিন এ বা সি সমৃদ্ধ একটি বা দুইটি করে ফল খান। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন ফল খাওয়া প্রয়োজন প্রায় ২০০ গ্রাম। পুষ্টি চাহিদা পূরণে প্রতি বছরই উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলের প্রাপ্যতা ও বছরব্যাপী সমভাবে বণ্টিত নয়। তাই আমাদেরকে পরিকল্পনামাফিক বিভিন্ন মৌসুমি ফলের চারা/কলম বসতবাড়িতে ও বাণিজ্যিকভাবে রোপণ করতে হবে। আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের ফল বিভিন্ন সময়ে পাওয়া যায়। সেজন্য বিভিন্ন সময়ে ফল পাওয়া যায় এমন ধরনের ফলের চারা নির্বাচন করে প্রতিটি বাড়ির চারপাশে  ও বাগানে রোপণ করলে সারা বছরই ফল প্রাপ্তির মাধ্যমে এই দেশের জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও পুষ্টি চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। তবে বর্ষাকাল বৃক্ষরোপণের উপযুক্ত সময় তাই এই সময় পরিকল্পনা করে বিভিন্ন ধরনের ফলের উন্নত মানের ও জাতের চারা/কলম রোপণ করা উচিত। সেই সাথে অবশ্যই সারা বছর প্রয়োজনীয় আন্তঃপরিচর্যা করতে হবে। তাহলেই কৃষি কাজে সফলতা আসবে। প্রয়োজনীয়ক্ষেত্রে কৃষি বিশেষজ্ঞ এর পরামর্শ নিতে হবে।

১পরিচালক, হর্টিকালচার উইং, ডিএই, খামারবাড়ি, ঢাকা, মোবাইল: ০১৭১৮৬২৪২২৯, ২উপজেলা কৃষি অফিসার, সংযুক্ত: হর্টিকালচার উইং, ডিএই, খামারবাড়ি, ঢাকা, মোবাইল: ০১৬৮৮০৫৪৭৮৬

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon